ঠাকুর দালানে ঠাকুরের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বলিউডের ‘ ঠাকুর ‘।

Special on the death anniversary of hindi cinema sanjeev kumar
Special on the death anniversary of hindi cinema sanjeev kumar

হিন্দি, সিনেমার প্রতিটি ছবিতে অভিনেতার ভূমিকা ‘ মাইলস্টোন ‘ হয়ে ওঠে। তাঁর স্বল্পবসনা ফিল্মি যাত্রাপথে তিনি হয়ে উঠেছিলেন অভিনয়ের ‘ পেরেন্ট ‘। সে যত বড় পারফরমার হতে পারে না কেন, সব কিছুতেই ফিল্মি পর্দায় মাথা নত হয়ে গিয়েছিল। শোলে ছবিতে ঠাকুর অভিনয় করে আসলে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বলিউডের ‘ ঠাকুর ‘।

হ্যাঁ, আমরা হিন্দি নিয়ে বলছি, অসাধারণ সিনেমাশিল্পী সঞ্জীব কুমারের আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে। ৬ নভেম্বর, 1985, মাত্র 47 বছর বয়সে চলচ্চিত্র শিল্প, ‘ নাথ ‘ ও লাখো ভক্তের ওপর অযত্নের ছাপ রেখে গেলেন এই কিংবদন্তী শিল্পী। যা আজ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়নি। হিন্দি সিনেমার অভিনয় সম্রাট দিলীপ কুমার ও গুরু দত্ত সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে তুলনা করেন। তাও সঞ্জীব কুমারের অভিনয়ের লোক দিলীপ কুমার। একই সঙ্গে দু ‘ বার সেরা অভিনেতার জাতীয় পুরস্কারও জিতেছিলেন সঞ্জীব কুমার

সঞ্জীব কুমারের ইচ্ছা কাজ করে গুজরাট থেকে মুম্বই
1938 সালের ৯ জুলাই গুজরাটের সুরাটে জন্মগ্রহণ করেন সঞ্জীব কুমার। সঞ্জীব আসল নাম ছিল হরিহর জায়ারিওয়ালা। কাছের যারা তাকে ডাকত হরিভাই বলে।

তাঁকে মুম্বই টেনে নিয়ে গেলে সঞ্জীব কুমার হয়ে যান।

অভিনয়ের শখ করে ঘুম থেকে উঠেই আইপিটিএ-র হয়ে মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন সঞ্জীব কুমার। এরপর তিনি যোগ দেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল থিয়েটারে। ২৫ বছরের এই পরিবারে ঠাঁই হয়েছে সঞ্জীব কুমারের, জীবন ছেড়েছেন কুমারী। সঞ্জীব কুমার তাঁর ফিল্মি পর্দায় ভালবাসতেন তাঁর পার্টনার জয়া বচ্চনকে, দু ‘ জনেরই একসঙ্গে বেশ কিছু ছবি করলেও তাঁরা হেমা মালিনীকে ভালবাসতেন। সঞ্জীব সব সময় উদ্বিগ্ন ছিলেন যে, তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ পুরুষই 50 আগে মারা যান। গোড়ার দিকে সঞ্জীব ছোট ভাইয়ের মৃত্যু তাঁকে চমকে দিয়েছিল, ভয় দেখিয়ে খুব বেশি বাঁচতে পারে না।

সঞ্জীব কুমারের ছবি ‘ হাম হিন্দুস্তানি ‘ র আত্মপ্রকাশ

হাম হিন্দুস্তানি ‘ (1960) ছিল সঞ্জীব কুমারের প্রথম ছবি। বহু ছবিতে ছোট রোল তৈরি করে ক্রমে তাঁর ছাপ তৈরি হয়। 1968-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ রাজা ও পদ ‘ নারী ‘ টয় ‘-এর সাফল্যে সঞ্জীব কুমারের পা শক্ত করে তুলে দিয়েছেন হিন্দি ছবিতে। সংগ্রামে (1968) একটি ছোট্ট চরিত্রে দেখা গেল দিলীপ কুমারকে।

একটি ছোট চরিত্রে তিনি ভালো পারফর্ম করে তার ছাপ রেখেছেন। তাঁকে নিয়ে বেশ অভিভূত দিলীপ কুমার। বয়সের মানুষটির চরিত্রে অভিনয় করতে পারদর্শী বলে মনে করেছিলেন সঞ্জীব কুমার । ২২ বছর বয়সে তিনি একটি নাটকে পুরনো চরিত্রে অভিনয় করেন। অনেক ছবিতেই তিনি অভিনয় করেছেন এবং তাঁর বয়সের চেয়ে বয়সে বড় ব্যক্তির ভূমিকা পছন্দ করেন।

প্রযোজক পরিচালক গুলজার বেশ অভিভূত সঞ্জীব কুমার
1972 সালে প্রযোজক-পরিচালক গুলজার দেখেন সঞ্জীব কুমারের ছবি ‘ মর্নিং-ও-সাহেব ‘। বেশ মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সঞ্জীব। গুলজার ও সঞ্জীব কুমার তখন জুটি বেঁধে কিছু সেরা ছবি, যেমন চেষ্টা (1973), আন্ধেরি (1975), আবহাওয়া (1975), আঙুর (1980), নামপ্রখর (1982)।

সঞ্জীব কুমার নিউ ডে নিউ নাইট (1974)-এ নয়টি ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং তাঁর অভিনয়ের ভূমিকা পালন করেন। নিজের কেরিয়ারে সব ধরনের ছবিই করেছেন সঞ্জীব কুমার। ওরা শুধু হিরো হতে চায়নি। তাঁর বিশ্বাস ছিল, শিল্পী তাঁর অভিনয়ের চেয়ে যে কোনও ভূমিকাই ভাল করতে পারেন এবং রোলের দৈর্ঘ্য কোনও কাজে লাগল না।

শোলাকিয়ায় অভিনয় করা ‘ ঠাকুর ‘ চরিত্রটি এখনো লাখো ভক্তদের স্মরণ
সঞ্জীব কুমারের ছবি শোলে-তে ঠাকুর চরিত্রে অভিনয় আজ পর্যন্ত মনে আছে। অভিনেতা হিসেবে সঞ্জীব কুমারের স্টান্ট। তাঁর সঙ্গে অভিনয় করা বেশিরভাগ অভিনেতাই বিশ্বাস করেন, তাঁরা এই দৃশ্য চুরি করেছেন। বলা হয়, ‘ ভিটা ‘ ছবিতে সঞ্জীব কুমার খুব ভারী কিছু পাননি, তাই দিলীপ কুমার তাঁকে শট দেওয়া এড়িয়ে চলেন।

দ্বিতীয়বার সেরা অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার পেলেন সঞ্জীব কুমার। এক বার নক (1971) জন্য এবং দ্বিতীয় চেষ্টা (1973) জন্য। ১৪ বার ফিল্মফার পুরস্কারের জন্য মনোনীত সঞ্জীব কুমার । দুবার তিনি সেরা অভিনেতা (আন্ধেরি-1976 এবং অর্জুন পন্ডিত-1977) এবং একবার সেরা পার্শ্ব অভিনেতা (ভিক্টিম-1969) জিতেছেন। অভিনয়ের নানা কথা জানান সঞ্জীব কুমার। কেরিয়ারে বেশিরভাগই চ্যালেঞ্জিং ভূমিকা পালন করেন তিনি। রোমান্টিক, হাস্যকৌতুক ও সিরিয়াস চরিত্রে ভালো লেগেছে তাঁর।

হেমা মালিনী চেয়েছিলেন সঞ্জীব কুমার কিন্তু ধর্মেন্দ্র এসেছেন মাঝে
ছবিতে শোলে-র চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জীব কুমার ঠাকুর, যিনি ধর্মেন্দ্র করতে চেয়েছিলেন। পরিচালক রমেশ সিপ্পি গুলিয়ে উঠলেন। সেই সময় হেমা মালিনীর ধর্মেন্দ্র ছিলেন নেশাখোর এবং সঞ্জীব কুমারও। রমেশ সিপ্পি ধর্মেন্দ্রকে বলেন, আপনি যেমন ভেরুর চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন, তেমন হেমা-র সঙ্গে রোমান্স করার সুযোগ পাবেন। ঠাকুর হয়ে গেলে আভেরু রোল দেব সঞ্জীব কুমারকে।

কৌশলে কাজ করে ধর্মেন্দ্র এই একগুঁয়ে হাল ছেড়ে দেন। এখানে আমরা আপনাদের বলি, সঞ্জীব কুমার তাঁর জীবন নিয়ে চিন্তিত, বিয়ে করা এড়িয়ে চলেন। হেমা মালিনীকে তিনি ভালবাসতেন, কিন্তু ধর্মেন্দ্র মাঝে আসেন। সুলিভান পন্ডিত-র সঙ্গে সঞ্জীব ঘনিষ্ঠরা খবরের শিরোনাম তৈরি করে রেখেছিলেন, কিন্তু সুলিভান-এর সঙ্গে বিয়ে করার সাহসই তিনি একত্রিত করতে পারেননি। পর্দায় প্রায়শই সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করা সঞ্জীব কুমার ছিলেন রিয়েল লাইফের মানুষটিও। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও শত্রুঘ্ন সিনহা, সচিন ও সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে খুব ভাল বন্ধুত্ব ছিল সঞ্জীব কুমারের।

সঞ্জীব মুম্বইয়ে বাংলো কিনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ হয়নি
মুম্বইয়ের একটি বাংলো কিনতে চেয়েছিলেন সঞ্জীব কুমার। সময় পেলেই একটি বাংলো পছন্দ করে তার জন্য অর্থ উত্তোলন করলে তার অনুভূতি বেড়ে যেত। বহু বছর ধরে তা চলেছিল। টাকা জমা দেওয়ার সময় বাড়িটি লাইক করে জানতে পারলেন, সম্পত্তিটি আইনি ফাঁদে পড়েছে। ৬ নভেম্বর 1985, 47 বছর বয়সে সঞ্জীব কুমার এই মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই দুনিয়াকে বিদায় জানান।

সঞ্জীব কুমারের মৃত্যুর পর তাঁর দশটি ছবি প্রদর্শিত হয়। বেশির ভাগ অফিসে তখনও ছিল। গল্পটি রেসহাফলড এবং প্রদর্শিত হয়েছে। সঞ্জীব কুমারের শেষ ছবি ‘ প্রফেসরের পাড়া ‘ মুক্তি পেয়েছিল 1993 সালে।