তার খেলা এবং সৌন্দর্যের সাথে তিনি একটি ‘ তারকা সেলিব্রিটি ‘ হয়ে ওঠেন।

Special on tennis star Sania Mirza birthday

আজ আমরা আপনার সঙ্গে একটা ‘ স্টার সেলিব্রেশন ‘ নিয়ে কথা বলব। বলিউড তারকা বা ক্রিকেট ও হকি খেলোয়াড় নন। তিনি খেলাটির একজন খেলোয়াড় যা আমাদের দেশে এমনকি বেশি জনপ্রিয় নয়। ভারতের টেনিস তারকা সানিয়া মির্জার কথা আজ আপনাদের জানাতে চলেছি আমরা। সানিয়া আজ জন্মদিন রয়েছে।

আসুন, সানিয়া মির্জার খেলা ও তাঁর জীবনের কথা বলি। টেনিস তারকা সানিয়া মির্জার জন্ম ১৫ নভেম্বর, 1986 মুম্বইয়ে (তখন বম্বে) ।

কারণ, তাঁর অসাধারণ খেলার সুবাদে সানিয়া খাস ‘ তারকার অবস্থান ‘ পেয়ে দেশের টেনিস খেলাকে উজ্জ্বল করেছেন তারকা হিসেবে। আজ তাঁর 33 জন্মদিন সেলিব্রেট করছেন সানিয়া। নিজের খেলা ও সৌন্দর্যের সঙ্গে সকলকে প্রভাবিত করে সানিয়া ১৪ বছর বয়সেই কেরিয়ার শুরু করেন। মুম্বইয়ে জন্ম নেওয়া মির্জা হায়দরাবাদে শৈশব পেরিয়ে এসে এখানেই খেলোয়াড় টেনিস খেলা শুরু করেন।

সানিয়া বছরে কর্মজীবন শুরু করেন 1999
সানিয়া মির্জার পারিবারিক প্রেক্ষাপট খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তার বাবা ইমরান মির্জা প্রখ্যাত ক্রিকেটার গোলাম আহমদের সম্পর্কের এক ভাই এবং তিনি নিজে হায়দরাবাদ সিনিয়র ডিভিশন লিগের খেলোয়াড় হয়েছেন। হায়দরাবাদের রঞ্জি দলে উইকেট কিপার হয়েছেন সানিয়া চাচা ফৈয়াজ। মহেশ ভূপতি বাবা তথা ভারতের সফল টেনিস খেলোয়াড় C.K. ভূপতি থেকে শুরুতে টেনিস কোচিং নিয়েছিলেন সানিয়া।

পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত জি-৫ ম্যাচে একক ও ডাবল গেমে সানিয়া পাকিস্তানের হয়ে ইন্টেল জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে 1999 সালে কর্মজীবন শুরু করেন সানিয়া। 2003 থেকে 2013, মহিলা টেনিস সংস্থা সিঙ্গলস ও ডাবল-এর সেরা ভারতীয় টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে নিজের জায়গা ধরে রাখতে সফল এবং এরপর সিঙ্গলস প্রতিযোগিতা থেকে অবসরের পর শীর্ষ স্থানে বসে অনিতা রায়না।

2003 সাল থেকে সানিয়া বিশ্বব্যাপী উজ্জ্বল খেলা শুরু করেন।

ভারতের তরফ থেকে ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রির পর উইম্বলডনে ডাবলস চলাকালীন সানিয়া জিতলেও তাঁর জীবনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মোড় হয়ে ওঠে বছর 2003। 2004-এ তাঁর ভাল পারফরম্যান্সের জন্য 2005 সালে অর্জুন পুরস্কারে সম্মানিত হন তিনি। 2005-এর অক্টোবরে টাইম ম্যাগাজিনের মাধ্যমে এশিয়ার 50 বিধায়কের মধ্যে নাম লেখালেন সানিয়া। 2010 মার্চ একটি সংবাদপত্রের মাধ্যমে ভারতের 33 গর্বিত নারীর তালিকায় তিনি লিপিবদ্ধ করেন।

১৮ বছর বয়সে বিশ্বব্যাপী এই খেলোয়াড়কে 2006 সালে পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। সানিয়া সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় যিনি এই সম্মান পান এবং 2006 সালে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক টেনিস দৈত্যদের মধ্যে ডব্লিউটিএ এর ‘ সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক নতুন কোমরের পুরস্কার ‘ প্রদান করা হয়। 2005-এর শেষে তাঁর আন্তর্জাতিক র ্যাঙ্কিং হয়ে গিয়েছিল 42, যা কোনও ভারতীয় টেনিস খেলোয়াড়ের জন্য সর্বোচ্চ। 2009 সালে তিনি প্রথম মহিলা খেলোয়াড় হিসেবে ভারতের পক্ষে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতেন।

টেনিস সৌন্দর্যের জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ফতোয়া জারি

সানিয়া নিজেও বিতর্কের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মুসলিম পরিবার থেকে হওয়া, 2005 সাল পর্যন্ত একটি মুসলিম সম্প্রদায় তাদের নাটকের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছিল। টেনিস খেলার সময় সানিয়া জামাকাপড় নিয়ে আপত্তি জানায় সমাজকে। শুধু তাই নয়, পাক ক্রিকেটার শোয়েব মালিককে বিয়ে করার পর ভারতে প্রচুর সমালোচনা করেন তিনি।

একই সঙ্গে টেনিস অ্যাকাডেমি গড়লেন সানিয়া
ভারতীয় টেনিস খেলোয়াড়দের জন্য বিশ্বমানের টেনিস প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে 2013-এর মার্চে চালু হওয়া একটি টেনিস অ্যাকাডেমিও তৈরি করে ফেলেছেন সানিয়া মির্জা। বর্তমানে সানিয়া তেলেঙ্গানা রাজ্যের ‘ ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ‘।

2017 সালে চোট পেয়ে আদালতের বাইরে সানিয়া।
ডাবলসে প্রাক্তন দুই নম্বর খেলোয়াড় হয়েছেন সানিয়া মির্জা। চোটের কারণে বছরের পর বছর এবং তার পরে 2017-এর অক্টোবরে মা হওয়ার জন্য আদালতের থেকে দূরে থাকেন সানিয়া। এটুকু বলি, ছেলের জন্ম দেওয়ার পর আবার কোর্টে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভারতের তারকা মহিলা টেনিস খেলোয়াড় সানিয়া মির্জা। সানিয়া মির্জা বলেছেন, তিনি দীর্ঘ দিন টেনিস থেকে দূরে থাকতেন।

তিনি তার সন্তানের জন্যও একটি উদাহরণ উত্থাপন করতে চান যে গর্ভাবস্থা, মাতৃত্ব বা পিতৃত্বকালীন এমন কিছু নয় যা আপনার স্বপ্নে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি জানান, বছর 2020 অলিম্পিক্সের জন্য আবার কোর্টে ফিরতে চান তিনি।

নিজের টেনিস কেরিয়ারে অনেক কিছু অর্জন করেছেন সানিয়া
ভারতের তারকা টেনিস খেলোয়াড় সানিয়া মির্জা জানিয়েছেন, কেরিয়ারে এত কিছু অর্জন করেছেন যে, দ্বিতীয় ইনিংসে এখন ‘ কিছু প্রমাণ হচ্ছে না ‘। তাঁর স্বর্ণকেরিয়ারে সানিয়া ছ ‘ টি ডাবলস গ্র্যান্ডস্লাম খেতাব জিতে বিশ্ব র ্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে পৌঁছে গেলেন।

এছাড়া মার্টিনা হিঙ্গিসের সঙ্গে ডব্লিউটিএ সার্কিটে বেশ কিছু খেতাব জেতে সুইজারল্যান্ড। সানিয়া সদ্য সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘ ‘ আমার কেরিয়ারে এত কিছু অর্জন করেছি যে, কল্পনাও করিনি। এখন পরের ইনিংসে কী হবে, সেটা আমার জন্য বোনাস হবে।

আমার ছেলে আমার কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার

টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা বলেছেন, আমার ছেলে ইহান আমার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার। যদি একটা আসনও দিতে পারতাম, তা হলে চমত্কার হবে। আমার ছেলে আবার ফিট হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছে। আমি যদি আসবো, তাহলেও আমাকে কিছু প্রমাণ করতে হবে না। আসার একমাত্র কারণ হবে যে আমি খেলতে পছন্দ করি।

সানিয়া বলেন, আগামী দু ‘ মাসের মধ্যে সানিয়া জানতে পারবে আমার শরীর কেমন জীবন। পুরোপুরি ফিট না হলে আমি খেলব না। ফিরে গিয়ে আহত হওয়ার কোনও মানে নেই। আশা করা হচ্ছে, সানিয়া খুব শীঘ্রই ফিট হয়ে কোর্টে ফিরবেন এবং দেশের কয়েক কোটি টেনিসপ্রেমীদের কিছু কৃতিত্বের উপহার দেবেন।