প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এখানে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং ভারত-চিন সম্পর্ককে আরও মজবুত ও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখতে সম্মত হন দুই শীর্ষ নেতা । ১১তম ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে আলাদা করে বৈঠক করে বুধবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, চেন্নাইয়ে গত মাসের অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন শক্তি ও নতুন দিশা পেয়েছে ।
বৈঠকের পর টুইটে মোদী বলেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে । দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করা সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় । আজকের আলোচনা ভারত-চিন সম্পর্ককে নবীকরণ করবে । পৃথক টুইটে প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে । বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন দুদক ।
এক টুইট বার্তায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবিশ কুমার বলেন, মোদী-জিনপিং বহুমুখী ভারত-চীন সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন । পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখার বিষয়ে মোদী ও চিনফিং সহমত পোষণ করেছেন । দুই নেতা বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন করে উচ্চপর্যায়ের ব্যবস্থা গড়ে তুলতেও সম্মত হয়েছেন ।
প্রধানমন্ত্রী মোদী জিনপিং-কে বলেছেন, আপনাদের সঙ্গে আরও একবার দেখা করতে পেরে আমি খুশি । যখন ফিরে তাকাই তখন ব্রাজিলে আমাদের প্রথম দেখা হয় এবং আমাদের যাত্রা শুরু হয় । অজানা মানুষের এই সফর আজ ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে পরিণত হয়েছে । পরের দিকে আমরা বেশ কিছু ফোরাম এবং দ্বিপাক্ষিক ইভেন্টে মিলিত হয়েছি । তুমি আমার বাড়ী রাজ্যে চলে গেলে, তুমি আমাকে বেইজিং-এর বাইরে উহান-এ নিয়ে যেতে… এসব এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা পাঁচ বছরের মধ্যে ঘটেছে ।… তাই আত্মবিশ্বাসী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে ।
মোদী বলেন, আপনারা যেমনটা বলেছেন এবং আমি বিশ্বাস করি চেন্নাইয়ে আমাদের সভা এই যাত্রাকে নতুন দিশা ও নতুন শক্তি দিয়েছে । কোনো এজেন্ডা ছাড়াই আমরা বৈশ্বিক অবস্থা-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি । 11-12-২০ অক্টোবর চেন্নাইয়ের কাছে মামুল্লাপুরমে দ্বিতীয় অনানুষ্ঠানিক সম্মেলন করেন এই দুই নেতা । মন্ত্রকের বক্তব্য অনুযায়ী, দুই নেতা জানিয়েছেন, সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ প্রতিনিধিদের আরেকটি বৈঠক হবে । এই দুজন সীমান্তবর্তী এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন ।
সাংহাই-এ চিন আমদানি রপ্তানি এক্সপোতে ভারতের প্রভূত অংশগ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জিনপিং । শি বলেন, তাঁকে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় এই এক্সপোতে লেনদেনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি করছে ভারত । চিনা সংবাদ সংস্থা শেনহুয়া চিনফিং-কে উদ্ধৃত করে বলেছে, ভারতের উন্নতমানের পণ্য রপ্তানিতে চিন স্বাগত জানিয়েছে ।
তিনি দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং উৎপাদনশীলতা, ফার্মাসিউটিক্যাল, তথ্য প্রযুক্তি, অবকাঠামো ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে আহ্বান জানান । চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনে তাঁকে আয়োজনের জন্য মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ভারতবাসীর আতিথেয়তা তিনি ভুলবে না । 2020 সালে চীনে তৃতীয় অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি । এর জন্য তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করা হবে কূটনৈতিক উপায়ের মাধ্যমে ।
দুই নেতা সীমান্ত এলাকায় ইনট্রেস ও শান্তি বজায় রাখতে তাদের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন । ডব্লিউটিও, ব্রিকস এবং রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ (আরএসপি) চুক্তিসহ বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন দুজনে । মোদী-জিনপিং-এর মধ্যে আলোচনা এমন একটা সময়ে ঘটে যাচ্ছে, যখন কিছু দিন আগে ভারত চিন-সমর্থিত আরএসপি চুক্তি থেকে এই প্রান্ত কেড়ে নিয়ে বলেছিল, প্রস্তাবিত চুক্তিটি ভারত ও ভারতীয়দের বিরূপ প্রভাব ফেলবে ।