মোদী সরকার সিডি অনুমোদন করে, কীভাবে কাজ করবে জানুন

Modi government approves CDS

নয়াদিল্লি। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার আজ চিফ অব ডিফেন্স স্টাফের (সিডি) ভূমিকা, বিধিমালা ও সনদ অনুমোদন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকে এই প্রভাবের প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, এই সিডি সামরিক বিষয়ক বিভাগের মাথায় থাকবে এবং একটি ফোর স্টার র্যাঙ্ক দিয়ে জেনারেল হবে। সিডি-র বেতন তিন পরিষেবার প্রধানদের মতোই হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে গঠিত হতে যাওয়া সামরিক বিষয়ক বিভাগের প্রধান হবেন তিনি। সিডি-ও দেবেন এই বিভাগের সচিব।

গত ১৫ই অগস্ট সিডি-র পদ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সিডি-র মাধ্যমে সরকারের প্রতিরক্ষা বিষয়ে পরামর্শ দেবেন বড় অফিসার।

সিডি-র নেতৃত্বে সামরিক বিষয়ক অধিদপ্তর তিনটি সেবার পাশাপাশি সেনা সদর, নৌ-সদর, বিমানবাহিনীর সদর দপ্তর ও প্রতিরক্ষা কর্মীদের সদরদপ্তরসহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত কার্যালয়ের মামলাগুলো খতিয়ে দেখবে। এছাড়া, টেরিটোরিয়াল আর্মি, আর্মি, নেভি ও এয়ার ফোর্স, ক্যাপিটাল প্রকিউরমেন্ট-এর কার্যকারিতা ছাড়া বিদ্যমান নিয়ম ও পদ্ধতির আওতায় তিনটি সেবা ক্রয়ের বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হবে।

সিডি-র পাশাপাশি সেনা প্রধানদের স্টাফ কমিটির স্থায়ী চেয়ারম্যানের পাশাপাশি সামরিক বিষয়ক বিভাগের প্রধানও থাকবেন। সেই সঙ্গে তিন পরিষেবার বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর প্রিন্সিপাল মিলিটারি অ্যাডভাইজর হবেন তিনি। তিন পরিষেবার প্রধানরা আগের মতোই তাঁর সেনা সম্পর্কে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে পরামর্শ দিতে থাকবেন। সিডি তিনটি সেবার প্রধানসহ কাউকে কোনো সামরিক কমান্ড দেবে না, যা তাদেরকে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে নিরপেক্ষ পরামর্শ দিতে সক্ষম হবে।

সামরিক বিষয়ক অধিদপ্তর সেবার প্রয়োজন অনুযায়ী যৌথ পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং যৌথ ও থিয়েটার কমান্ডের সহিত সামরিক কার্যক্রমে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার উন্নীত করার মাধ্যমে ক্রয়, প্রশিক্ষণ ও নিয়োগে একীভূত প্রচার করবে। সেই সঙ্গে আদিবাসীদের অস্ত্র ও যন্ত্রাংশের ব্যবহারও উৎসাহিত করবে পরিষেবা।

স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে সিডি তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেও জানিয়েছিল তিন পরিষেবা সংস্থার প্রশাসন। ডিফেন্স প্রকিউরমেন্ট কাউন্সিল এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার নেতৃত্বে ডিফেন্স প্ল্যানিং কমিটির সদস্য হবেন তিনি। পরমাণু কমান্ড অথরিটির সামরিক উপদেষ্টাও তিনি করবেন। অফিস ধরে তিন বছরের মধ্যে তিনি অপারেশন, যন্ত্রপাতি, প্রশিক্ষণ, সহায়তা সেবা, যোগাযোগ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদিতে তিনটি সেবার সংযুক্তিকরণের লক্ষ্যে কাজ করবেন। সমন্বিত সক্ষমতা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর প্রতিরক্ষা মূলধন ক্রয় প্রকল্প এবং দুই বছর বার্ষিক ক্রয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

অপব্যয়ব্যয় কমিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধ সামর্থ্য বাড়ানোর জন্য তিনটি সেবার কার্যকারিতা উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করবে সিডি।

কার্গিল যুদ্ধের পর রিভিউ কমিটি এই পদ তৈরির সুপারিশ করেছিল। প্রধানমন্ত্রীর এই পদ ঘোষণার পর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে সিডি-র পদের রূপরেখা ও নিয়ম ও চার্টার চূড়ান্ত করা হয়। কমিটি সম্প্রতি সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল।

বিশেষ পরিস্থিতিতে একটি পদ্ধতির কাজ করার জন্য সিডি লক্ষ্য করা হয়েছে যাতে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার একটি মানসিকতার উপর ভিত্তি করে একটি শক্তিশালী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। তিন সেনাবাহিনী একটি গতি নিয়ে চলবে এবং চিন্তা করবে যাতে দেশের পুরো সামরিক শক্তিই এগিয়ে যেতে পারে।

পরিবর্তিত চ্যালেঞ্জ ও পরিস্থিতিতে তিন পরিষেবাকে এক কমান্ডের আওতায় আনতে সিডি-র পদে অনেক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। এর কর্মক্ষম সামর্থ্য বৃদ্ধিতে এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে পরিষেবার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য হবে।