সুপৌল বিহারে সুমাউল জেলার সদর ব্লকের একটি গ্রামে শুধু আইনি আইন মেনে দাহ নয়, ভোজ ও গণভোজ হয়।
সদর ব্লকের করানপুর গ্রামের প্রাচীন রাধা-কৃষ্ণ মন্দির কমপ্লেক্সে বুধবার সকালে একটি আহত পেঁচা পাওয়া যায়। গ্রামবাসীরা তাঁর দিকে তাকালেই সব গ্রামবাসী তাঁর পশু চিকিৎসকের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে চিকিৎসা করলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। বুধবার রাতে পেঁচা মারা যায়।
গ্রামবাসীরা নববস্ত্র-এ পেঁচা দেহ মুড়িয়ে আইন আইন মেনে মন্দির কমপ্লেক্সে তাঁর শেষ রীতিনীতি পালন করেন। প্রচুর গ্রামবাসী কনটু করেন।
সুমাউল জেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে করানপুর গ্রামের বাসিন্দা তথা বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ভগবান পাঠক বলেন, পেঁচা দেবী লক্ষ্মী বাহবা কুড়োন বলে মনে করা হয়। এ কারণে উল্কিতে জানাজা শেষে আইন আইন নিয়ে একটি অনুষ্ঠান সম্পাদিত হয় এবং কুমারী গার্লস ও বটধন্যবাদ ভোজ-এর পর নিজেই মন্দির প্রাঙ্গণে গণভোজ অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, গ্রামে নিজেই এই পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
পাঠক বলেন, এই গ্রামের জন্য এই প্রথম নয়। তারও আগে একটি ষাঁড়ের মৃত্যুর পর তাঁর শেষকৃত্য কর ভোজ অনুষ্ঠিত হয়। দেখভালের অভাবে বহু প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হয়ে যায়। প্রথম স্প্যারোর ঘর-বাড়ি পাওয়া গেল, এখন আর দেখা যায় না। লুপ্ত পাখি প্রজাতির মধ্যে পেঁচা-ও অন্তর্ভুক্ত।
লর্ড পাঠক বলেন, গ্রামবাসীদের কগনিজেন্ট-এ এমন কোনও দাবিহীন পশু বা পাখির মৃত্যুর পর সম্মানজনক ভাবে শেষকৃত্য সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই কাজের উদ্দেশ্য গ্রামে পশু পাখিদের প্রতি মানুষের সংবেদনশীলতা। গ্রামের বাইরের মানুষও এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
করানপুর গ্রামের বাসিন্দা জয় প্রকাশ চৌধুরী বলেন, পেঁচা লক্ষ্মী বাহন বলে মনে করা হয় এবং সব জীবজীবের প্রতি সহানুভূতি থাকা মানুষের কর্তব্য।
তিনি বলেন, অন্য জনের ক্ষেত্রেও এমন কাজ করা উচিত। এর ফলে শুধু পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করবে না, ভবিষ্যতের প্রজন্মকে পশুদের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার জ্ঞানও দেবে।