অশোক গাছের উপকারিতা-সুবিধা
বলা হয়, এমন একটি গাছ, যার অধীনে বসে দুঃখ করে না অশোক, অর্থাৎ নারীর সব দুঃখ দূর করার ক্ষমতা যাঁর আছে, তিনি অশোক । এর গাছ সব সময় আম গাছের মতো সবুজ, যা ২৫ থেকে ৩০ ফুট উঁচু, অনেক শাখা । স্টেম সাধারণত লালচে ও বাদামি হয় । এই গাছ সারা ভারতে সহজেই পাওয়া যায় । পাতা 9 ইঞ্চি লম্বা, বৃত্তাকার এবং 5-6 জোড়া মধ্যে তাক করা হয় । প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, পাতার রং কপার রঙের হয়, যা পরে গাঢ় ও গাঢ় হয়ে যায় । পাতার রং শুকিয়ে যাওয়ার পর লাল হয়ে যায় । ফুল প্রাথমিক ভাবে সুন্দর, হলুদ, কমলা রঙের ।
বসন্তে ফুল ফুটেছে, সুগন্ধি, উজ্জ্বল, সোনালি রঙের, যা পরে লাল হয়ে যায় । সিনিয়র মাসে ব্যবহৃত এই কোয়া ৪ থেকে ১০ ইঞ্চি লম্বা, চেপ্টে, ১ দশমিক ২ ইঞ্চি চওড়া, ৪-১০ টি বীজ দেড় ইঞ্চি লম্বা । পড প্রথম গাঢ় বেগুনি, যা রান্না করলে কালো হয়ে যায় । জলাশয়ে রঙের বাইরে থেকে গাছের ছাল দেখা যাচ্ছে, কিন্তু ভিতর থেকে রক্ত বেরিয়েছে রঙের ।
বিভিন্ন ভাষায় অশোকা গাছের নাম
সংস্কৃত-অশোক, হেম পুষ্প, তারকবল্লভ ।
হিন্দি, মারাঠি, গুজরাতি-অশোক ।
ইংরেজি-আসওকা গাছ ।
ল্যাটিন-সারাহ ইন্ডিকা সারাক আসাওকা
অশোক গাছের ঔষধি গুণ
আয়ুর্বেদিক মতামত অনুযায়ী, অশোকের জুস তিক্ত, কষায়, ঠান্ডা-স্বভাব, পিগমেন্ট, পিটপিট, টিস্যু, কীট, শূল, বিষ, রক্ত ব্যাধি, পেট, রোগ, প্রদাহজনক পরিত্রাতা, জরায়ুর রোগ, সব ধরনের প্রণয়ী, জ্বর, গাঁটে ব্যথার ব্যথা কিলার ।
হোমিওপ্যাথির মতে, অশোকের ছাল দিয়ে তৈরি মা টিঞ্চার সব জরায়ুর রোগের উপকার করে এবং বারবার প্রস্রাব করে, কম প্রস্রাব করে, পেটে ব্যথা, অনিয়মিত ক্ষরণ, ঋতুস্রাব সহ রক্ত ক্ষয় করে ।
বৈজ্ঞানিক অভিমত অনুযায়ী, অশোকের মূল প্রভাব পড়ে নীচের পেটে অর্থাৎ যোনি, কিডনি, ব্লাডারে । জরায়ু ছাড়া অন্য ডিম্বাণুতে এর উত্তেজক প্রভাব পড়ে । এতে মহিলাদের উর্বরতা বৃদ্ধি পায় । এর রাসায়নিক গঠনে অশোকা বার্ক-এর ট্যাননস থাকে ৭ শতাংশ, ক্যাটালসিস ৩ শতাংশ, কমার্শিয়াল আইল ৪ শতাংশ, ক্যালসিয়াম অর্গানিক ২ শতাংশ, আয়রন মিনারেল ৪ শতাংশ, গ্লাইক্যাসাইড এবং স্যাপোনস ২ শতাংশ । এছাড়া কিনোস্টেরল পাওয়া যায়, যার ইস্ট্রোজেন হরমোন-সদৃশ ক্রিয়া রয়েছে । অশোকের প্রধান কাজ স্টেরয়েড এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ সল্ট যৌগ কারণে ।
মূল বীজ সরাতে ব্যবহৃত অশোক পাতার পরিমাণ
ছাল গুঁড়ো ১০ থেকে ১৫ গ্রাম । বীজ ও ফুলের গুঁড়ো ৩ থেকে ৬ গ্রাম । ছাল 50 মিলি কোয়াথ (কোড) ।
বিভিন্ন রোগে ব্যবহৃত অশোকা গাছ
১. গর্ভবতী থাকতে: গর্ভাশয়ে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিয়মিত কার্ডস দিয়ে অশোকের ফুল খাওয়া হয় ।
২. সাদা উৎপাদনের চিকিৎসায় উপকারী: অশোকের ছাল গুঁড়া ও মিসরি সমপরিমাণ পরিমাণে মিশিয়ে দিনে কয়েক সপ্তাহ ধরে গরুর দুধ দিয়ে প্রত্যেককে এক চা-চামচ করে সেবন করুন ।
৩. রক্তের দরের চিকিৎসায়: অশোক ছাল, সাদা জিরা, দারুচিনি ও এলাচি বীজ জ্বাল দিয়ে ডিসিশন প্রস্তুত করে দিনে ৩ বার চাপ দিন ।
৪. আলগা যোনি সংকোচ: একই এলাকায় অশোক ছাল, বাবুল ছাল, সাইকামিওর ছাল, কাজু বাদাম ও ফিটকিরি বেঁটে দিয়ে ডিসিশন করুন । এটি ড্রেন এবং যোনিতে একটি ঘার মাধ্যমে প্রতিদিন এটি পৌঁছাতে । তারপর এক ঘণ্টা পর প্রস্রাব করা । কিছু দিন ব্যবহার করলে যোনি টাইট করে দেবে ।
৫. নন-মূত্রত্যাগ: দু ‘ চামচ করে নিয়মিত জলে অশোক বীজ পান করলে মূত্রনালীর অভিযোগ ও খড়্গ দূর হতে পারে ।
৬. অশোকের ছাল ছাড়ানো ডিসিশন সেদ্ধ করে নিন । ঘন হয়ে এলে তাতে ঠান্ডা করে সমপরিমাণ সরষের তেল মিশিয়ে নিন । এটি ব্রণ, ফোঁড়া এবং তাই প্রয়োগ করুন । নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে সেগুলি সরিয়ে ফেলা হবে ।
৭. আপনার ইকটি বাড়াতে: অশোকের ছাল ও ব্রাহ্মী গুঁড়া সমপরিমাণ পরিমাণে মিশিয়ে কয়েক মাস ধরে এক কাপ দুধ দিয়ে সকাল-সন্ধ্যা এক চা চামচ করে খেয়ে নিন ।
৮. শ্বাসকষ্ট হলে শ্বাস: এক চামচ প্যানে অশোক বীজের গুঁড়া চিবিয়ে খেলে তা চোকানোর অভিযোগ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে ।
৯. রক্তক্ষয়ী অর্শ্বরোগ নিরাময়ে উপকারী: অশোকের ছাল ও তার ফুল সমপরিমাণ পরিমাণে নিয়ে রাতে এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন । সকালে জল পাচার করে তা পান করুন । একইভাবে রাতে সকালে ছাল ও ফুলের পানি ভিজিয়ে আপনাকে দ্রুত সাহায্য করতে পারে ।