সেনাবাহিনী সম্পূর্ণরূপে ধর্মনিরপেক্ষ, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল: জেনারেল রাওয়াত

নয়াদিল্লি। সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত জানিয়েছেন, দেশের সশস্ত্র বাহিনী ধর্মনিরপেক্ষ এবং মানবিক অধিকারকে সম্পূর্ণ সম্মান করে।

আজ এখানে মানবাধিকার কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীদের ‘ মানবাধিকার রক্ষা ও যুদ্ধবন্দী ‘ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণ শৃঙ্খলাপরায়ণ এবং সকল মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেনাবাহিনী শুধু তাদের জনগণকে নয়, শত্রুর মানবাধিকার রক্ষা করে এবং জেনেভা চুক্তি অনুযায়ী পিএসএলে চিকিৎসা করে।

তিনি বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর আচরণ ইনসানিয়ত ও শরদের মন্ত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি। তারা পুরোপুরি ধর্মনিরপেক্ষ। প্রযুক্তির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধের পরিবর্তনশীল রূপরেখা বড় চ্যালেঞ্জ। সামরিক হামলার মতো সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক আইনে কোনো জবাবদিহিতা নেই।

তাই সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান সামলানোর সময় জনগণের মন জয় করা জরুরি। এসব কার্যক্রম চালানোর সময় প্রকৃত সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করা প্রয়োজন এবং এটি যাতে আশপাশের সম্পত্তি বা অন্যের ক্ষতি না করে সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং ও কঠিন কাজ।

সেনাপ্রধান বলেন, সামরিক সদর দপ্তরে একটি মানবাধিকার শাখা স্থাপন করা হয়, যা এখন ডিরেক্টরের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেলের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেনাকর্মীদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংক্রান্ত অভিযোগ জানানোর জন্যও তাঁদের কাছে পুলিশ রয়েছে। তিনি বলেন, তল্লাশি অভিযানের সময় বিশেষ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রেখে সেনাবাহিনী এখন সেনা পুলিশে নারী নিয়োগ শুরু করেছে।

জেনারেল রাওয়াত বলেন, প্রতিটি সন্ত্রাস-দমন বা বিদ্রোহ-বিরোধী অভিযানের পর তদন্ত আদালত যে-সব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব ঘটনার বিশদ বিবরণ বহন করে, তার মধ্যে রয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনী সুবিধা আইন উল্লেখ করে সেনা প্রধান বলেন, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে পুলিশের মতো ক্ষমতাও পায় সেনা। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে সেনাবাহিনী নিজেই তার ব্যবহার শিথিল করে সেনা প্রধানের পক্ষ থেকে বিশেষ আদেশ দেওয়া হয় যা কঠোরভাবে মেনে চলা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাও কঠোরভাবে মেনে চলে সেনা। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের আগে জওয়ানদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।

এর আগে বিচারপতি পিসি পন্থ, সদস্য, মানবাধিকার কমিশনেও মানবাধিকার সংক্রান্ত আইন তুলে ধরা হয়। তিনি বলেন, কর্তব্যের বেদীতে থাকা সশস্ত্র বাহিনীকেও তাদের মৌলিক কিছু অধিকার আদায়ে তাগিদ দিতে হয়।

মানবাধিকার কমিশনের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ গোবিন্দ, কমিশন সদস্য ডি এম মালয়, ডিরেক্টর জেনারেল (তদন্ত) প্রভাত সিংহ, যুগ্ম সম্পাদক অনিতা সিনহা এবং বেশ কয়েকজন পদস্থ আধিকারিক ও কর্মীও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।