আবে আহমদ আলী, শান্তি ও উদারীকরণের নতুন ‘ মসিহা ‘

(সারা বিশ্ব থেকে শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কারের জন্য ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদকে অভিনন্দন । নেলসন ম্যান্ডেলা সারা জীবন ধরে আক্রান্ত হয়েছেন)
আজ বিশ্বের অনেক দেশ (বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে
) সার্বভৌমত্ব ও কর্তৃত্ব নিয়ে বহু বছর ধরে গৃহযুদ্ধে আছে । দিন দিন গুলিবর্ষণ, বোমা হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেশ কয়েকজন নিষ্পাপ নিহত হয়েছে । শুক্রবার শান্তি ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দেশের বাকি অংশের জন্য ছিল সুখবর । 43 বছর বয়সী ইথিওপিয়ার দেশটির তরুণ প্রধানমন্ত্রী আইয়েই আহমেদ আলী তার শান্তি ও উদারীকরণের জন্য বিশ্বকে একহাত নেন । 2019 সাল পর্যন্ত শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে আলিকে ।

আলী নোবেল পুরস্কার ঘোষণার পর তিনি সব প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে অভিনন্দন পাচ্ছেন । 2018 সালে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আবে আহমেদ আলী তার পার্শ্ববর্তী দেশ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসা ও শেষ পর্যন্ত তার উদারীকরণ ও সংস্কারমূলক নীতির জন্য ২২ বছর আগের ‘ সীমান্ত বিরোধ ‘ র ভূয়সী প্রশংসা করেছেন । বিশ্বের অনেক দেশ যে বার্তা দিয়েছে, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী আলিকেও অভিনন্দন প্রাপ্য । আবেনি আহমেদকে শুধু ইথিওপিয়া নয়, অনেক দেশেই নেলসন ম্যান্ডেলা হিসেবে দেখা হয় ।

ছোটবেলা থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন নবি আহমেদ ।

প্রতিবেশী দেশ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে শান্তির জন্য জোরদার প্রচেষ্টা
এবে আহমেদ আলী গত বছরের এপ্রিলে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন এবং তিনি এরিট্রিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাবেন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন । তিনি ইরিত্রিয়ার প্রেসিডেন্ট আইএসআইএস আফভেকির সঙ্গে শান্তি নিয়ে ঘনঘন আলোচনা করেন এবং কোনও শান্তি, যুদ্ধ নীতি না নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছান । দুই দেশের শীর্ষ নেতারা এ বছরের জুলাই ও সেপ্টেম্বরে দুদেশের মধ্যে শান্তি চুক্তি ঘোষণা করেন ।

আজ অনেক অস্থিতিশীল দেশ প্রধানমন্ত্রী আলীর কাছ থেকে শিখতে পারে
বর্তমানে সিরিয়া-তুরস্ক ও ইরানে বেশ কিছু দিন ধরে বোমা, মিসাইল রয়েছে । সীমান্ত সংক্রান্ত বিবাদের জেরে প্রতিবেশীদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বহু দেশের । তুরস্কের সেনাবাহিনী গত তিনদিন ধরে উত্তর সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামলা চালিয়ে বহু নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে । আজকের গৃহযুদ্ধে জ্বলছে ইরান, ইরাক, সিরিয়া, তুরস্ক-সহ বিভিন্ন দেশ, কিছু বার্তা পেতে হবে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবে আহমেদ আলিকে ।

সংসারে শান্তি ফিরিয়ে আনতে । ঠিক যেমন পিএম আলি শান্তিপূর্ণ পন্থা অবলম্বন করে তাঁর প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ শেষ করেছেন । একই ভাবে সব সমস্যায় জর্জরিত দেশ শান্তিতে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সব রকম বিবাদের নিষ্পত্তি করে বিশ্বকে শান্তির বার্তা দিতে পারে ।

একটি উদার ও সংস্কারবাদী নীতি দ্বারা ইথিওপিয়ায় প্রণীত মসিহ
2018-এর এপ্রিল মাসে আবি আহমেদ ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন । প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ইথিওপিয়ায় উদার-সংস্কারমূলক নীতি গ্রহণ করেন । 100 দিনের মধ্যেই আলী জরুরী অবস্থা প্রত্যাহার করে নেন । জেল থেকে কয়েক হাজার বিরোধী কর্মীকে মুক্তি দেন তিনি । অসন্তুষ্ট নেতা ও কর্মীদের দেশে নির্বাসিত করা হয়, তাঁদের ফেরার অনুমতি দেয়। তাদের এই প্রচেষ্টাকে উদারনীতির ‘ মসিহা ‘ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল ।

আফ্রিকার দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ইথিওপিয়া এবং পূর্ব আফ্রিকার সর্ববৃহৎ অর্থনীতি ।

শম্ভুনাথের গৌতম, প্রবীণ সাংবাদিক